হেলাল হোসেন কবির: লালমনিরহাটে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী কর্তৃক এক সাংবাদিককে হত্যার হুমকির অভিযোগ রয়েছে।
জানা যায়, বাংলানিউজ২৪.কম এর লালমনিরহাট ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট খোরশেদ আলম সাগরকে জবাই করে হত্যার হুমকী দিয়েছেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী মাহবুব আলম লিকু।
সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতে নিজের জীবন ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আদিতমারী থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন খোরশেদ আলম সাগর। হুমকীদাতা মাহবুব আলম লিকু আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের টাওয়ার পাড়ার মৃত মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। বর্তমানে লালমনিরহাট শহরের টিএনটি পাড়ার বাসিন্দা। তিনি আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত।
সাধারণ ডায়েরী সূত্রে জানা গেছে, আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারী কোয়ার্টার বরাদ্দে অনিয়ম তুলে ধরে গত ২৫ নভেম্বর বাংলানিউজে “কাকের বাসায় কোকিলের বাস! রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার” শিরোনামে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন বাংলানিউজের লালমনিরহাট ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট খোরশেদ আলম সাগর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী মাহবুব আলম লিকু সংক্ষুব্ধ হন। ওই হাসপাতাল এলাকার আব্দুল আউয়ালের ছেলে ভাদাই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেনের সাথে প্রতিবেদক খোরশেদ আলম সাগরের সখ্যতা থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ধারনা ওই নিউজের পিছনে ইকবালের হাত রয়েছে। তাই সাংবাদিক সাগর ও ইকবালকে বিভিন্ন সময় দেখে নেয়ার হুমকী দিয়ে আসছে হাসপাতালের প্রধান অফিস সহকারী মাহবুব আলম লিকু। এর জের ধরে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৭.০৩ মিনিটে মাহবুব আলম লিকু তার ০১৭১৮৮৭৮০৪৫ নম্বর থেকে ইকবাল হোসেনের ০১৯২৬৬০৯৬৪৩ নম্বরে দুইবার ফোন করে কিন্তু রিসিভ করেনি ইকবাল। পরে জানতে পেয়ে ইকবাল তার ফোন থেকে সন্ধ্যা ৭.১০ মিনিটে প্রধান অফিস সহকারী মাহবুব আলম লিকুকে ফিরতি ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেই হাসপাতাল নিয়ে নিউজ করায় সাংবাদিক সাগরকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। এক পর্যায়ে সাংবাদিক সাগর ও তাকে সেল্টার দেয়ার দায়ে ইকবাল হোসেনকে জবাই করে হত্যা করার হুমকী দেন মাহবুব আলম লিকু। এক মিনিট ৫০সেকেন্ডের এ কল রেকর্ডে লিকু বলেন, “ইকবাল আমার মাথা গরম হয়েছে। কত বড় সাংবাদিক হয়েছে, দেখবো। লোকজন নিয়ে আসতেছি জবাই করবো। তুই সেল্টার দিচ্ছিস, তোকেও জবাই করবো। ও (সাংবাদিক সাগর) কোথায় রে?”। প্রথম দিকে সাংবাদিক সাগরের পরিবার নিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন লিকু। এ ঘটনায় নিজের ও ইকবালের জীবন এবং উভয়ের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) রাতেই আদিতমারী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন বাংলানিউজের সাংবাদিক খোরশেদ আলম সাগর। যার জিডি নং-১২০৮।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোক্তারুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।